মাস্তুল ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘ইসলামের আলোকে সুস্থ জীবন’

১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
শনিবার (৯ নভেম্বর) মাস্তুল ফাউন্ডেশন ও আল যাকাত সাদাকা ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘ইসলামের আলোকে সুস্থ জীবন’ এই অনুষ্ঠানে ইসলামিক শিক্ষা ও সুস্থ জীবনযাপনের মধ্যকার সম্পর্ক তুলে ধরা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, ডাক্তার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিশেষজ্ঞ এবং সমাজসেবীরা অংশগ্রহণ করেছেন।

বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত
এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি, দায়বদ্ধতা এবং মানবিক মূল্যবোধ প্রচার।
দুইটি অধিবেশনে বিভক্ত এই অনুষ্ঠানটির প্রথম অধিবেশনে ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা ইসলামের দৃষ্টিতে সাদাকার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করেন। দ্বিতীয় অধিবেশনে শারীরিক ও মানসিক বিশেষজ্ঞরা দৈনন্দিন জীবনে সুস্থ থাকার উপায় নিয়ে বক্তব্য রাখেন এবং দর্শকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে আলোচক এবং অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল কাহহার টিভি উপস্থাপক, কলামিস্ট, মুফতি মোহাম্মদ মহিবুল্লাহীল বাকী পেশা ইমাম, জাতীয় মসজিদ- বাইতুল মোকাররম ডাঃ গোলাম নবী প্রফেসর, জেড এইচ শিকদার ওমেন্স মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ডাঃ জেনিফার বিনতে হক ডায়েট এন্ড নিউট্রিশন কনসালটেন্ট, গ্রীন লাইফ হাসপাতাল এন্ড থাইরোকেয়ার কন্সালটেশন সেন্টার, ডঃ ইয়াহিয়া আমিন সাইকোলজি, ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন, প্রেসিডেন্ট- লাইফস্প্রিং ফাউন্ডেশন,ডাঃ ফাহমিদা ফেরদৌসি প্রমুখ। শাইখ মুফতি সাইফুল ইসলাম বলেন, দান-সদকা শুধু একজন মুমিনের ইবাদত নয়, বরং এটি আল্লাহর প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, এছাড়াও দানের প্রতিদানকে আল্লাহ তায়ালা সাতশ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেন, দানে বিপদ কাটে।
ডা. গোলাম নবী তাঁর বক্তব্যে বলেন, “মাস্তুল ফাউন্ডেশনের সাথে আমার যাত্রা অনেক দিনের এবং এই দীর্ঘ সময়ে তাদের কাজের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা তৈরি হয়েছে। ইসলাম আমাদের শুধু ধর্মীয় বিধানের কথা বলে না, বরং আমাদের জীবনযাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সুস্থতা ও কল্যাণের পথ দেখায়।
মাস্তুল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক কাজী রিয়াজ রহমান বলেন, “ইসলামের আলোকে সুস্থ জীবন” অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য হলো ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী স্বাস্থ্য ও সুন্দর জীবনযাপন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। ইসলাম শুধু ইবাদতের নির্দেশ দেয় না, বরং শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার উপরও গুরুত্বারোপ করে। আমাদের লক্ষ্য শুধু দান-সাদাকার গুরুত্ব বোঝানো নয়, বরং ইসলামের নির্দেশনা অনুসারে জীবনযাপনে সকলকে অনুপ্রাণিত করা।
এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা ইসলামী মূল্যবোধের আলোকে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার পথে অনুপ্রাণিত হন, যা আয়োজকদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।
উল্লেখ্য, মাস্তুল ফাউন্ডেশন বহুমুখী সমাজসেবামূলক কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে নিজস্ব স্কুল, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও বৃদ্ধ আশ্রম যেখানে শতাধিক পিতামাতাহীন অনাথ/এতিম শিক্ষার্থী ও বৃদ্ধ- বৃদ্ধা বসবাস করেন। এর বাহিরে কয়েক জেলায় প্রজেক্ট স্কুলগুলোতে হাজারের অধিক সুবিধাবঞ্চিত মেধাবী শিক্ষার্থীদের সকল শিক্ষার উপকরণ দেয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য, পুষ্টিকর খাবার, শিশু অধিকার, মৌলিক চাহিদা নিশ্চয়তা করা হচ্ছে।
এছাড়া চিকিৎসা খাতে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে 'মাস্তুল এইড' প্রকল্পের মাধ্যমে অর্ধশতাধিকের অধিক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত অসচ্ছল পঙ্গুত্ববরণকারী রোগীদের চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি হুইলচেয়ার ও কৃত্রিম পা দিয়ে স্বাবলম্বী করছে। মাস্তুল ফাউন্ডেশনের রয়েছে সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র যার মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে কর্মক্ষম করে তোলা হচ্ছে।
এর বাহিরে যাকাত স্বাবলম্বী প্রজেক্টের মাধ্যমে ১০০০ জনের বেশি মানুষকে স্বাবলম্বী করা হয়েছে। মাস্তুলের প্রধান কাজের মধ্যে রয়েছে দাফন-কাফন সেবা প্রজেক্ট, যার মাধ্যমে করোনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৩০০০ এর অধিক লাশ দাফন হয়েছে। রয়েছে মাস্তুল মেহমানখানা, যেখান থেকে শতাধিক অসহায় নিম্ন আয়ের মানুষের একবেলা পেট পুড়ে খাওয়ার ব্যবস্থা হয়।