মোস্তফা কামাল ও পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ

ছবি : সংগৃহীত
১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫৬ পিএম
মেঘনা গ্রুপের মালিক মোস্তফা কামাল, তার স্ত্রী বিউটি আক্তার এবং তাদের সন্তানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। গত ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। পাশাপাশি তাদের একক নামে পরিচালিত কোনো প্রতিষ্ঠান থাকলে তার হিসাবও জব্দ করতে বলা হয়েছে।

বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের ইফতার মাহফিল
মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ২৩(১) (গ) ধারা অনুযায়ী মোস্তফা কামাল, তার স্ত্রী বিউটি আক্তার ও তাদের সন্তানের নামে পরিচালিত হিসাবের লেনদেন প্রথম দফায় ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় তথ্যও জমা দিতে বলা হয়েছে।
নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, উল্লিখিত ব্যক্তিরা, তাদের স্বামী, পুত্র-কন্যার ব্যক্তিগত হিসাব এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত হয়ে থাকলে তার তথ্যাদি (হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ফরম, শুরু থেকে হালনাগাদ লেনদেন বিবরণী) সংযুক্ত এক্সেল শিট ফরম্যাটে পূরণ করে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে বিএফআইইউয়ের কাছে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। এরপর থেকে দেশে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা এবং সরকারঘনিষ্ঠ কিছু ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তাদের ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হচ্ছে। সেই প্রক্রিয়ায় এবার মেঘনা গ্রুপের মালিক মোস্তফা কামাল ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হলো।
উল্লেখ্য, মোস্তফা কামাল ২০০০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ২১ বছরে আমদানিতে ৭৯ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা আন্ডার ইনভয়েসিং, শুল্কায়নযোগ্য পণ্য—মোটরযান, নৌযানের বিপরীতে বাধ্যতামূলক বীমা পলিসি এড়িয়ে গিয়ে ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের এক হাজার ৫১৯ কোটি টাকা, সরকারের ভ্যাট, স্ট্যাম্প ডিউটি ও ব্যাংক কমিশনের এক হাজার কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ করেছেন বলে এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
অর্থ পাচার ও বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ, গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগ কাজে লাগিয়েছিলেন মোস্তফা কামাল। মেঘনা নদীর জায়গা দখল করে শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ এবং নদী ভরাট করে নদীর স্বাভাবিক গতিপথ নষ্ট করেছেন।
এ ছাড়া মেঘনা গ্রুপের ৫৫টি প্রতিষ্ঠানে ৩১টি ব্যাংক ও তিনটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ১৬ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা। এ গ্রুপের সবচেয়ে বেশি ঋণ রয়েছে সোনারগাঁও সিড ক্র্যাশিং মিলস লিমিটেডে, যার পরিমাণ চার হাজার ৩১১ কোটি টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঋণ রয়েছে মেঘনা সুগার রিফাইনারি লিমিটেডে— তিন হাজার ১৮ কোটি টাকা। এরপর এক হাজার ৩০০ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে সোনারগাঁও ময়দা ও ডাল মিলস লিমিটেডে। আর মেঘনা পিভিসি লিমিটেডের ঋণের পরিমাণ এক হাজার ১২৫ কোটি টাকা। মেঘনা রি-রোলিং অ্যান্ড স্টিল মিলস লিমিটেডে রয়েছে ৯৮৫ কোটি টাকার ঋণ।