এমএফএস খাতের জন্য আইন চায় টিআইবি

অর্থনীতি ডেস্ক

২৭ মে ২০২৫, ০৩:৩৩ পিএম

মোবাইল আর্থিক সেবা বা এমএফএস খাতের জন্য স্বতন্ত্র আইন প্রণয়ন করা এবং সবার জন্য সমান প্রতিযোগিতা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিসহ সুশাসন নিশ্চিতকল্পে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।


বাংলাদেশকে অর্থ সহায়তা করছে কানাডা

মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুরে ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে সংস্থাটির আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই সুপারিশগুলো তুলে ধরা হয়। এ সময় ‘মোবাইল আর্থিক সেবা খাতে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।


টিআইবি জানায়, সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের ভূমিকা সুনির্দিষ্ট করা, আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার আলোকে এমএফএস পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কাঠামো নিশ্চিত করা, আন্তঃলেনদেন ব্যবস্থায় সব প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করা, গ্রাহক তথ্যের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা এবং জালিয়াতি ও প্রতারণা প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, সেবামূল্য এবং এজেন্ট ও পরিবেশকদের কমিশনের সীমা নির্ধারণ এবং এর তদারকি নিশ্চিত করা, এজেন্ট ও পরিবেশক নিয়োগ ও তদারকি প্রক্রিয়া সুনির্দিষ্ট করা এবং তাদের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করার বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি আরও জানায়, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা ২০১৯ সংশোধন করে বিএফআইইউ’র গোয়েন্দা প্রতিবেদন সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসেবে আদালতে উপস্থাপনের বিধান করতে হবে এবং প্রয়োজনে প্রতিবেদন প্রস্তুতকারীর সঙ্গে অনুসন্ধান বা তদন্তকারী কর্মকর্তার সরাসরি যোগাযোগের বিধান যুক্ত করতে হবে। সন্দেহজনক লেনদেন প্রতিবেদন তৈরি এবং গ্রাহক সমস্যা সমাধানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। এজেন্ট ও পরিবেশকদের জন্য সর্বজনীন আচরণবিধি প্রণয়ন করতে হবে।

এই খাতের সব চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে এবং জনস্বার্থবিরোধী সম্পাদিত সব চুক্তি যথাযথ মূল্যায়ন সাপেক্ষে সংশোধন বা বাতিল করা, গ্রাহক স্বার্থ বিবেচনায় সেবামূল্য উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে হবে এবং সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আন্তঃলেনদেন ব্যবস্থা সহজ ও সাশ্রয়ী করা, অনলাইন জুয়া ও বেটিং ওয়েবসাইট এবং অ্যাপে থাকা এমএফএসপি’র নাম ও লোগো ব্যবহার করে প্রচারণা চালানো বন্ধে সংশ্লিষ্ট এমএফএসপি ও বিটিআরসিকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা জানায় টিআইবি।

সংস্থাটি আরও জানায়, কালো তালিকাভুক্ত গ্রাহক তথ্যসহ সন্দেহজনক লেনদেন সম্পর্কিত একটি সমন্বিত তথ্যভাণ্ডার তৈরি ও নিয়মিত হালনাগাদ করতে হবে এবং সেখানে সব এমএফএসপি’র প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বিনামূল্যে গ্রাহকদের এক বছরের হিসাব বিবরণী দেখার ও ডাউনলোড বা সংগ্রহ করার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। এমএফএস-এর নিরাপদ ব্যবহার সম্পর্কে গ্রাহকদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে দেশব্যাপী বিভিন্ন মাধ্যমে (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়া, ওয়েবসাইট) প্রচারণা বৃদ্ধি করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিযোগ নিরসন ব্যবস্থাকে কার্যকর ও সহজলভ্য করার জন্য গ্রাহক স্বার্থ সুরক্ষা কেন্দ্রের হটলাইন নম্বরকে টোল ফ্রি করতে হবে। এজেন্ট পয়েন্ট ও গ্রাহকসেবা কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট এমএফএসপি ও সিআইপিসি’র হটলাইন নম্বর প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করতে হবে। সব এমএফএসপি, বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থায় গ্রাহকের সমস্যা এবং জালিয়াতি ও প্রতারণার বিষয়ে অভিযোগ দাখিল প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে।

এ সময় এমএফএস খাতে সংগঠিত সব অনিয়ম ও দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নির্বিশেষে অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানায় টিআইবি।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনা) অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক (রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি) মুহাম্মদ বদিউজ্জামানসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।