বিশ্বখ্যাত ম্যাগাজিন দ্য ইকোনমিস্টের ‘কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৬ বছরের স্বৈরশাসন হটিয়ে গণতন্ত্রের পথে অগ্রযাত্রার উপহারস্বরূপ বাংলাদেশকে এই সম্মানসূচক আখ্যা দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক এই সাময়িকীতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

পৃথিবীর জনসংখ্যা ৮০৯ কোটি

ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে প্রতিবছর ডিসেম্বরে বার্ষিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে একটি দেশকে বর্ষসেরার স্থান দেওয়া হয়। ২০২৪ সালের বর্ষসেরা দেশের সম্মান পেল বাংলাদেশ।

চলতি বছরের আগস্টে শেখ হাসিনা তার চতুর্থ মেয়াদের শাসনামল ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী দেশকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ হিসেবে উপস্থাপন করলেও হাসিনা সরকারের দমন-পীড়ন ক্রমে বেড়ে চলছিল। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে প্রতিপক্ষ দলের নেতা-কর্মীদের নির্বিচারে আটক ও গুমের পাশাপাশি ভোট কারচুপি ও দুর্নীতির চূড়ান্ত মাইলফলক স্পর্শ করে আওয়ামী লীগ সরকার। 

এ পরিস্থিতিতে বাড়তে থাকা জনরোষের সামনে এক মাসের বেশি টিকতে পারেননি হাসিনা। ৫ আগস্ট পদত্যাগপত্র স্বাক্ষর করে বিমানযোগে ভারত পালানোর পর মানুষের ঢল নামে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে।

এদিকে বিপ্লবোত্তর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সর্বস্তরের বেসামরিক নাগরিকের পাশাপাশি সামরিক বাহিনীর সমর্থন পেয়ে দেশের প্রশাসন ও অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য স্থিরাবস্থা আনতে পেরেছে ইউনূস সরকার। 

এদিকে বর্তমানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের জন্য চাপ দিলেও সংস্কারের আগে নির্বাচনের পরিকল্পনা নেই। 

এদিকে প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাত ও কূটনৈতিক জটিলতাও রয়েছে। তবে এই পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের অগ্রগতি অনুপ্রেরণার উৎস বলে মনে করছে দ্য ইকোনমিস্ট।

ম্যাগাজিনটির তালিকায় বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল পোল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, আর্জেন্টিনা ও সিরিয়া।

বাংলাদেশে আইনগত সুশাসনের প্রত্যাশা করে দ্য ইকোনমিস্টের বক্তব্য, ‘স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক শাসনের দিকে এগিয়ে যাওয়ায় আমাদের বিবেচনায় ২০২৪ সালের সেরা দেশ বাংলাদেশ।’