ট্রাম্পের শপথ, বিদায় বাইডেন
নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথগ্রহণ শেষে আজই রেকর্ডসংখ্যক নির্বাহী আদেশে সই করার পরিকল্পনা

২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৫১ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জমকালো অভিষেক অনুষ্ঠান আজ সোমবার। তাঁকে দ্বিতীয়বারের মতো বরণ করতে প্রস্তুত ওয়াশিংটন ডিসির ইউএস ক্যাপিটল ভবন। শপথের মধ্য দিয়ে ৭৮ বছর বয়সী এই রিপাবলিকান নেতা দেশটির ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবারও হোয়াইট হাউসে পা রাখবেন।

পাকিস্তানি এফ-১৬ দেখে পালাল ভারতের ৪ যুদ্ধবিমান
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের দ্বিতীয় শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও ঐতিহাসিকতার একটি মিশ্রণ রয়েছে। এটি কেবল ক্ষমতা হস্তান্তরের একটি আয়োজন নয়, বরং আমেরিকার ভবিষ্যতের দিকনির্দেশক এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
অনুষ্ঠানকে ঘিরে এরই মধ্যে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে রাজধানী ওয়াশিংটনকে। ব্যাপক সতর্কতা হিসেবে স্থাপন করা হয়েছে কালো রঙের ৩০ মাইল (৪৮ কিলোমিটার) দীর্ঘ ও উঁচু অস্থায়ী বেড়া। মোতায়েন করা হয়েছে ২৫ হাজার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা কর্মকর্তা।
অভিষেক অনুষ্ঠানে দর্শকশ্রোতাদের নিরাপত্তা তল্লাশির জন্য বসানো হচ্ছে চেকপয়েন্ট। থাকছে অগণিত সিসিটিভি ক্যামেরাও।
দেশটির আবহাওয়া পূর্ভাবাস জানিয়েছে, নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ নেওয়ার দিন ওয়াশিংটন ডিসিতে ভয়াবহ ঠাণ্ডা পড়তে পারে। এমন আশঙ্কায় অভিষেক অনুষ্ঠান মার্কিন কংগ্রেসের ভেতরে দেয়ালঘেরা হলঘরে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে আগেই।
রয়টার্স জানিয়েছে, ঠাণ্ডার কারণে চার দশকের মধ্যে এবারই প্রথম প্রেসিডেন্টের অভিষেক ইনডোরে হতে যাচ্ছে।
শপথগ্রহণের আগের দিন ট্রাম্প একটি তারকাবহুল ‘মেক আমেরিকা গ্রেট ভিক্টরি র্যালি’ আয়োজন করেছেন। এতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধনী ইলন মাস্ক এবং ‘ওয়াইএমসিএ’ গানটির জন্য বিখ্যাত ব্যান্ড ভিলেজ পিপল পারফর্ম করেছে। ট্রাম্পের এই প্রত্যাবর্তনকে একটি অসাধারণ যাত্রার সমাপ্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে তিনি দুবারের প্রাণনাশের চেষ্টা ও একটি ঐতিহাসিক ফৌজদারি মামলা পেছনে ফেলে প্রেসিডেন্সি পুনরুদ্ধার করেছেন।
গত শনিবার ওয়াশিংটন পৌঁছে গেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্ত্রী মেলানিয়া এবং ট্রাম্প পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে ইউএস এয়ার ফোর্সের একটি উড়োজাহাজ স্থানীয় সময় শনিবার ডালাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথগ্রহণ শেষে আজই রেকর্ডসংখ্যক নির্বাহী আদেশে সই করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প।
তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, সংখ্যাটি ১০০ পার করবে কি-না। জবাবে তিনি বলেন, সংখ্যাটি অন্তত এমনই হবে। ট্রাম্প যেসব নির্বাহী আদেশে সই করবেন, তার অনেকই বিদায়ি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের গৃহীত নীতি বাতিল করতে করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ট্রাম্প তাঁর নতুন মেয়াদের প্রথম দিন থেকে যেসব কর্মসূচি গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তার মধ্যে গণবিতাড়ন কর্মসূচিও রয়েছে।
শপথ অনুষ্ঠানে থাকবেন কংগ্রেস সদস্যরা, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, বিপুলসংখ্যক রাজনীতিক, প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা, বিদেশি অতিথিসহ প্রচুর মানুষ। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শপথ অনুষ্ঠানের জন্য কোনো নির্দিষ্ট সমন্বিত হুমকির তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে একক হামলার আশঙ্কা রয়েছে। গত সপ্তাহেও এক ব্যক্তিকে চাপাতি নিয়ে ক্যাপিটলে প্রবেশের চেষ্টাকালে আটক করা হয়েছে।
প্রথাগতভাবে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো না হলেও ট্রাম্প ইতালি ও হাঙ্গেরির ডানপন্থী নেত্রী জর্জিয়া মেলোনি ও ভিক্টর অরবান, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ার মিলেই এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। অরবান অনুষ্ঠানে থাকবেন না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছেন। আর চীনের পক্ষ থেকে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেং উপস্থিত থাকবেন। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো চীনের কোনো জ্যেষ্ঠ নেতা সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে শপথ নিতে দেখবেন। (সূত্র : রয়টার্স, ডয়চে ভেলে)