রাজনৈতিক চাপে মোদি সরকার : ভারতীয় সেনাপ্রধান

ছবি : সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০২ জুন ২০২৫, ০২:৫৫ পিএম

কাশ্মীরের পেহেলগামকাণ্ডে অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন পাকিস্তান ভারতের যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে কিনা- এ নিয়ে সকল জল্পনা-কল্পলার অবসান ঘটিয়েছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান অনিল চৌহান। সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ টিভির এক প্রশ্নে বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করেছেন তিনি। এর পরপরই বিরোধীদের চরম সমালোচনার মুখে পড়ে মোদি সরকার।


দুই সহযোগীসহ পি কে হালদারের জামিন

পেহেলগামে হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে এপ্রিলে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। ভারতের অপারেশন ‘সিঁদুরের পর' পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের সামরিক বাহিনী সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। পাকিস্তান দাবি করে ভারতীয় বিমান বাহিনীর রাফাল বিমান গুলি করে নামিয়েছে তারা। এ নিয়ে নয়াদিল্লি এতদিন নীরব থাকলেও মুখ খুলেছেন ভারতের সেনাপ্রধান।


যা বলেছেন ভারতের সেনাপ্রধান

সিঙ্গাপুরে সাংগ্রিলা ডায়লগে অংশগ্রহণ করার সময় বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন অনিল চৌহান। ব্লুমবার্গ টিভির প্রশ্নে চৌহান বলেন, অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন পাকিস্তানের আঘাতে ভারতের যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছে৷

সেনাপ্রধানকে প্রশ্ন করা হয়, পাকিস্তান কি ভারতের যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছিল? এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেননি চৌহান। তিনি বলেন, আমাদের কাছে যুদ্ধবিমান ধ্বংস হওয়া বা তার সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কেন সেটা ধ্বংস হল সেটা গুরুত্বপূর্ণ।

সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, তার মানে অন্তত একটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান পাকিস্তানের হামলায় ধ্বংস হয়েছিল? এর জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ'। তার ভাষ্য, সম্পূর্ণ ঘটনার ইতিবাচক দিক হলো আমরা কৌশলগত ভুলটা দ্রুত ধরে ফেলেছি। ভুল শুধরে নিয়ে দুদিনের মধ্যে আবার নতুন কৌশল প্রয়োগ করেছি।

ব্লুমবার্গের সাংবাদিক সরাসরি প্রশ্ন করেন, পাকিস্তান দাবি করেছে, তাদের হামলায় ভারতের অন্তত ছয়টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছে৷ এটা সত্যি?'' এই প্রশ্নের জবাবে পাকিস্তানের দাবি বাতিল করেন চৌহান।

বিরোধীদের সমালোচনা

সেনাপ্রধানের মন্তব্য সামনে আসার পরে বিরোধীরা নিশানা করেছে মোদি সরকারকে। তারা প্রশ্ন তুলেছে গোপনীয়তা নিয়ে। দেশবাসীকে এই বিষয়ে না জানানোর উদ্দেশ্য নিয়েও সমালোচনা করেছে তারা।

দেশের মানুষের আগে বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে তা কেন জানানো হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাগরিকা ঘোষ। তিনি সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন করেন, বিদেশি সংবাদমাধ্যম কেন প্রথমে এই খবর বের করবে? এই তথ্যগুলি কেন প্রথমে ভারতীয়দের, দেশের সংসদকে এবং জনপ্রতিনিধিদের জানানো হয়নি?

কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বক্তব্য, সেনাপ্রধানের মন্তব্য নিয়ে আলোচনা করা উচিত সংসদের বিশেষ অধিবেশনে। কেন্দ্রীয় সরকার গোটা দেশকে বিভ্রান্ত করেছে। যুদ্ধ নিয়ে ধোঁয়াশা এখন অনেকটাই স্পষ্ট। তিনি বলেন, আমাদের পাইলটরা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। আমাদেরও কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷ আমরা পাইলটদের সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানাই।

এছাড়াও কংগ্রেসসহ বিরোধীদের প্রশ্ন রয়েছে যুদ্ধবিরতি ঘিরে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি হয়েছে কি না, এ নিয়েও সরকারের জবাব চাইছে তারা। এ বিষয়েও ব্লুমবার্গ টিভি সেনা প্রধানকে প্রশ্ন করলেও সরাসরি কোন জবাব দেননি তিনি। (সূত্র: ডয়েচে ভেলে)