বাংলাদেশের গণমাধ্যম : কোনটি কার নিয়ন্ত্রণে?

প্রতীকী ছবি

নিউজ ডেস্ক

২৪ মার্চ ২০২৫, ০১:১৮ পিএম

সাতটি গণমাধ্যমের মালিক বসুন্ধরা গ্রুপ। ২০০৯ সালে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এসব গণমাধ্যমের মালিক হয় দেশের অন্যতম শীর্ষ এ শিল্পগোষ্ঠী। বিগত শেখ হাসিনার সরকারের সময় একই বছরে এই গ্রুপ দুটি বাংলা, একটি ইংরেজি ও একটি অনলাইন নিউজপোর্টাল প্রকাশ করে। পরবর্তী সময়ে একটি নিউজভিত্তিক টিভি চ্যানেল, একটি ক্রীড়া টিভি ও একটি রেডিও সম্প্রচার শুরু করে তারা। বসুন্ধরা গ্রুপের মতো একক মালিকানায় এতসংখ্যক না হলেও বেশ ‍কিছু মালিক রয়েছেন, যাদের নিয়ন্ত্রণে একাধিক গণমাধ্যম রয়েছে।


ঢাকায় মধ্যরাতে বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি

অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। কমিশন বলেছে, একক ব্যক্তির একাধিক গণমাধ্যমের মালিকানা ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর স্বার্থে ব্যবহারের চেষ্টা হয়। কমিশন তার সুপারিশে একই ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের একাধিক গণমাধ্যমের মালিকানার বিদ্যমান পদ্ধতি বাতিল করে পাবলিক লিমিডেট কোম্পানি করার সুপারিশ করেছে।


বিবিসিখ্যাত সাংবাদিক কামাল আহমেদের নেতৃত্বাধীন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন গত শনিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসের হাতে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।

প্রতিবেদনে কমিশন বাংলাদেশের গণমাধ্যমের মালিকদের একটি পরিচয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। কমিশন বলেছে, বাংলাদেশের অধিকাংশ গণমাধ্যমই বৃহৎ পুঁজিপতিদের নিয়ন্ত্রণে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, খাদ্য ও নিত্যপণ্য আমদানি ও সরবরাহ, পোশাকশিল্প, ওষুধশিল্প, বিমা, গ্যাস ও বিদ্যুৎখাত এবং আবাসন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হওয়ায় রাষ্ট্র ও সমাজে তাদের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। এদের অনেকেই সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতেও অংশ নেন। গণমাধ্যমের মালিকদের তালিকায় বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও রয়েছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। সাংবাদিকদের বেশির ভাগ রাজনৈতিক কারণে লাইসেন্স পেয়েছেন এবং পরে অন্য বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করে প্রতিষ্ঠান গড়েছেন।

গণমাধ্যম কমিশনের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন সাতটি গণমাধ্যমের পাঁচটিই সংবাদভিত্তিক। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বসুন্ধরা গ্রুপ দ্রুত মিডিয়া সম্প্রসারণে আগ্রহী হয়। অল্প সময়ের মধ্যে চারটি সংবাদমাধ্যমের মালিকানা অর্জন করে। ২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি কালের কণ্ঠ, ১৫ মার্চ বাংলাদেশ প্রতিদিন ও ২৪ অক্টোবর ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি সান প্রকাশনা শুরু করে। একই বছর ১ জুলাই অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজ২৪ডটকম যাত্রা শুরু করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বসুন্ধরা গ্রুপ ২০১৬ সালের ২৮ জুলাই বেসরকারি টেলিভিশন নিউজ২৪ চ্যানেল সম্প্রচার শুরু করে। এর আগে ২০১৫ সালে বিনোদনমূলক এফএম রেডিও চ্যানেল রেডিও ক্যপিটালের লাইসেন্স পায়। ২০২১ সালে মিলেনিয়াম মিডিয়া লিমিটেড থেকে তিতাস টিভি কিনে তা টিভি স্পোর্টস নামে দেশের প্রথম ক্রীড়া টিভি চ্যানেল চালু করে।

এত অল্প সময়ে একই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে এতগুলো সংবাদমাধ্যমের অনুমোদন দেওয়ার নজির নেই বলে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন উল্লেখ করেছে। তাদের মতে, একই প্রতিষ্ঠানের দুটি বাংলা দৈনিক প্রকাশের বাণিজ্যিক যৌক্তিকতা প্রশ্নবিদ্ধ। এ ধরনের পরিস্থিতি বাংলা দৈনিকের বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার পথে অন্তরায় তৈরি করে এবং একচেটিয়া প্রভাব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা বলে মনে করে কমিশন।

কমিশন তার প্রতিবেদনে বলেছে, গত কয়েক বছরে ব্যাংক লুটের অভিযোগে পরিচিতি এস আলম গ্রুপের সাইফুল আলম বেশ কয়েকটি মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। ২০২১ সালে সম্প্রচার শুরু হওয়া নেক্সাস টিভির এমডি সাইফুল আলম ও চেয়ারম্যান তার স্ত্রী। বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার বেনামি বিনিয়োগ রয়েছে বলে কমিশন দাবি করেছে। ২০২৪ সালে অনুমোদন পাওয়া ‘স্টার নিউজ’ টেলিভিশনের সঙ্গে এস আলম জড়িত। স্টার নিউজের উদ্যোক্তা নাবিল গ্রুপ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে নাবিল গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের ছায়া কোম্পানি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে বলে কমিশন তার প্রতিবেদনে দাবি করেছে। এর বাইরে এস আলম গ্রুপের একটি অনলাইন রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

প্রয়াত শিল্পপতি লতিফুর রহমান প্রতিষ্ঠিত ট্রান্সকম গ্রুপ দেশের দুটি প্রভাবশালী গণমাধ্যম প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার গড়ে তুলেছেন। দ্য ডেইলি স্টারের মালিক প্রতিষ্ঠান মিডিয়াওয়ার্ল্ডের সম্পাদক মাহফুজ আনামের এবং প্রথম আলোর মালিক প্রতিষ্ঠান মিডিয়া স্টারে সম্পাদক মতিউর রহমানের সামান্য শেয়ার রয়েছে।

মিডিয়া স্টারে (প্রথম আলো) ট্রান্সকমের একক মালিকানা থাকলেও মিডিয়াওয়ার্ল্ডে র‌্যাংগস ও আরলিং লিমিডেটের (প্রয়াত আমিজুর রহমান) অংশীদারত্ব বিদ্যমান। মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর কাছ থেকে ট্রান্সকম এফএম রেডিও চ্যানেল ‘আয়না ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (এবিসি) লাইসেন্স কিনে এবিসি রেডিও প্রতিষ্ঠা করে। ২০০৯ সালে এটি চালু হয়। ২০২৩ সালে রংধনু গ্রুপের কাছে এই রেডিও চ্যানেলটি বিক্রি করা হয়।

২০০৯ সালে একাত্তর টিভির লাইসেন্স পাওয়ার পর মোজাম্মেল হোসেন বাবু মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের কাছে বড় অঙ্কের শেয়ার বিক্রি করে দেন। মোস্তফা কামাল নিজ নামে ছাড়াও এক ছেলে ও দুই মেয়ের নামে শেয়ার কেনেন।

মোজাম্মেল বাবু একসঙ্গে ১০টি টিভি চ্যানেলের জন্য আবেদন করেছিলেন। মেঘনা গ্রুপের অধীনে এফএম রেডিও ৭১ রয়েছে।

মালটিমিডিয়া প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজ টেলিভিশনের চ্যানেলের মালিক। ১৯৯৭ সালের ১৫ জুলাই এটিএন বাংলা ও ২০১০ সালের ৭ জুন এটিএন নিউজ সম্প্রচার শুরু করে। এ প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সমর্থক সাংবাদিক মনজুরুল ইসলামের শেয়ার রয়েছে।

আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, শিল্পপতি গোলাম দস্তগীর গাজীর মালিকানাধীন গাজী গ্রুপ গাজী টেলিভিশন ও সারাবাংলাডটনেট নিউজ পোর্টালের মালিক। সরকার পরিবর্তনের পর গত বছর সেপ্টেম্বরে নিউজপোর্টালটি বিক্রি করে দিয়েছেন।

রেনেসাঁ গ্রুপের কর্ণধার সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম দুরন্ত টিভি ও রেডিও ঢোলের মালিক। রেডিও ঢোল ২০১৫ সালে চালু হলেও পরবর্তী সময়ে বন্ধ হয়ে যায়। জেমকন গ্রুপ ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউন ও অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের মালিক। এ গ্রুপের পরিচালক কাজী নাবিল আহমেদ বিতর্কিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এমপি হয়েছিলেন।

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর মালিকানাধীন কর্ণফুলী গ্রুপ দুটি মিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা। এর একটি ভোরের কাগজ। কিছুদিন আগে এর প্রধান কার্যালয় বন্ধ করে সাংবাদিক-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা হয়। ডিক্লারেশন টিকিয়ে রাখতে বিশেষ ব্যবস্থায় অনিয়মিত প্রকাশনা অব্যাহত রয়েছে। এ গ্রুপের অন্য গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান দেশটিভি। তবে এই চ্যানেলের নিয়ন্ত্রণ এখন তাদের হাতে নেই বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।

সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন দুটি টিভি চ্যানেল সময় টিভি ও এখন টিভি। সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলামের ভাগনে আহমেদ জোবায়েরকে ২০০৯ সালে সময় টিভির অনাপত্তি দেওয়া হয়। শেয়ার পাওয়ার পর ২০১০ সালে ৭৫ শতাংশ শেয়ার সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমানের কাছে বিক্রি করে দেন। তবে টিভি পরিচালনার ভার নিজের হাতে রেখে দেন জোবায়ের। ৫ আগস্টের পরিবর্তনের পর তাকে বরখাস্ত করে সিটি গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। চেয়ারম্যান ফজলুর রহমানের মেয়ে শিলা ইসলাম সময় টিভির এমডি ও এখন টিভির চেয়ারম্যান। এই গ্রুপের স্পাইস এফএম রেডিও রয়েছে।

যমুনা গ্রুপ দৈনিক যুগান্তর ও যমুনা টিভির মালিক; বিশ্বাস বিল্ডার্সের এমডি নজরুল ইসলাম দুলাল কালবেলা পত্রিকার মালিক; হা-মীম গ্রুপ সমকাল ও চ্যানেল ২৪-এর মালিক; স্কয়ার গ্রুপ মাছরাঙা টিভি ও রেডিও দিনরাত-এর মালিক; দীপ্তবাংলা টিভির মালিক কাজী ফার্মস লি.; ইমপ্রেস গ্রুপ চ্যানেল আই ও রেডিও ভূমির মালিক; বিজয় টিভির মালিক চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন ও সাবেক মন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী, চ্যানেল এসের মালিক ইসমত কাদির গামা, মাইটিভির মালিক নাসির উদ্দিন সাথী এবং এসএ টিভির মালিক এসএ পরিবহন ও কুরিয়ার সার্ভিসের মালিক সালাউদ্দিন আহমেদ।

চ্যানেল ৯-এর লাইসেন্স পান আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ভাইয়ের স্ত্রী মাহবুবা আক্তার। পরে এর ৮৫ শতাংশ শেয়ার কিনে নেন এনটিভির সাবেক এমডি এনায়েতুর রহমান, ডিবিসি নিউজের মালিক এজি গ্রুপ। ২০১৩ সালে এ টিভির লাইসেন্স পান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।

এছাড়া ইকবাল সোবহান চৌধুরী ইংরেজি দৈনিক ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক। গ্লোবাল টিভির মালিক আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি মামুনুর রশীদ কিরন। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের মোহাম্মদী গ্রুপ নাগরিক টিভির মালিক। এ গ্রুপের ডেইলি অবজারভার পত্রিকায় বিনিয়োগ রয়েছে। বেস্ট গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান কামাল মজুমদার মোহনা টিভি প্রতিষ্ঠা করেন। ৫ আগস্টের পর চ্যানেলটির অন্য পাঁচজন শেয়ারহোল্ডারের নিয়ন্ত্রণে আসে এ চ্যানেল।

রংধনু গ্রুপ তিনটি গণমাধ্যমের মালিক। এগুলো হলো- গ্রিন টিভি, প্রতিদিনের বাংলাদেশ ও এবিসি রেডিও। এ গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম। গ্রিন টিভির পেছনে ছিলেন সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তার মেয়েকে এ টিভির চেয়ারম্যান করা হয়। পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদও এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ওরিয়ন গ্রুপ ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের মালিক। চৌধুরী নাফিজ সরাফাত দৈনিক বাংলা ও নিউজবাংলা২৪ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা। দৈনিক বাংলায় নাসা গ্রুপের (নজরুল ইসলাম মজুমদার) শেয়ার রয়েছে।

এ ছাড়াও আরো যেসব টিভি চ্যানেলের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আছে প্রয়াত লেখক সৈয়দ শামসুল হকের পুত্র দ্বিতীয় সৈয়দ হকের আমার টিভি, রাশেদ খান মেননের খেলা টিভি, আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্রোকারেজ হাউসের মালিক ও সাংবাদিক শফিকুর রহমানের সিটিজেন টিভি, তানজিয়া ইসলামের প্রাইম টিভি, আবু বাশার রকিবুল বাসেতের টিভি টুডে, মিলেনিয়াম মালটিমিডিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুর মোহাম্মদের উৎসব টিভি, বিএসবি ফাউন্ডেশনের এম কে বাশারের ক্যামব্রিয়ান টিভি এবং হাসান তৌফিক আব্বাসের আনন্দ টিভি।

বিভিন্ন ব্যবসায়ীর মালিকানাধীন আরো কিছু পত্রিকা হলো: ইউএস-বাংলা গ্রুপের আজকের পত্রিকা ও ঢাকা পোস্ট অনলাইন পোর্টাল, ইউনিক গ্রুপের আমাদের সময়, রূপায়ণ গ্রুপের দেশ রূপান্তর, আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের সময়ের আলো ও গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের দৈনিক জনকণ্ঠ।

কমিশন তার সুপারিশে মাঝারি ও বৃহৎ মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে একটি সময়ের মধ্যে সর্বসাধারণের জন্য শেয়ার ছাড়া ও স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য কথা বলেছে। উদ্যোক্তা পরিচালক ও ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি বা একই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শেয়ার ধারণের সীমা ২৫ শতাংশের মধ্যে সীমিত করা ও প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে শেয়ার বণ্টন বাধ্যতামূলক করার কথা বলেছে।

বিশ্বের অনেক দেশে একই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান একাধিক গণমাধ্যমের মালিক হতে পারেন না উল্লেখ করে কমিশন তার সুপারিশে বাংলাদেশে অচিরেই এ ব্যবস্থা চালুর কথা বলেছে। ক্রস-ওনারশিপ নিষিদ্ধ করে অর্ডিন্যান্স জারির সুপারিশ করেছে। বর্তমানে যারা একাধিক প্রতিষ্ঠানের মালিক সেগুলোও নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে অবসান ঘটানোর কথা বলেছে।

এ বিষয়ে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেন, গণমাধ্যমের মালিকানা একক সঙ্গে কেন্দ্রীয়ভূত থাকলে তা ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর স্বার্থে ব্যবহারের চেষ্টা হয়। সেখান থেকে বের হতে আমরা ক্রস ওনারশিপ বন্ধের সুপারিশ করেছি। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে ‘ওয়ান হাউস ওয়ান মিডিয়া’ পলিসি হওয়া উচিত। তিনি বলেন, একই হাউস থেকে একাধিক গণমাধ্যম প্রকাশ হলে দেখা যায় হুবহু একই নিউজ প্রকাশিত হচ্ছে। একই ভাষায় দুটি দৈনিক পত্রিকায় মতামত কলাম বিশ্লেষকও হুবহু এক। এটা বাজারের স্বচ্ছ প্রতিযোগিতাকে বিভ্রান্ত করার কৌশল। এটা ভেঙে দেওয়া দরকার।

বিশ্বের অনেক দেশে একই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান একাধিক মাধ্যমের মালিক হতে পারেন না উল্লেখ করে কামাল আহমেদ আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশে এখন ক্রস ওনারশিপ অ্যালাউড নয়। টেলিভিশনের মালিক সংবাদপত্রের মালিক হতে পারেন না বা সংবাদপত্রের মালিক টেলিভিশন চ্যানেলের মালিক হতে পারেন না। ভারতেও এ আইন বিবেচনাধীন রয়েছে। অনেক দেশে এই পরিবর্তন হচ্ছে।