ছাত্রদলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র

ছবি : সংগৃহীত

এস.এম ফারহান লাবিব (জেলা প্রতিনিধি, বগুড়া)

২১ জুলাই ২০২৫, ০১:৫১ পিএম

বগুড়া জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাবিবুর রশিদ সন্ধান সরকার ও সাধারণ সম্পাদক এম রাকিবুল হাসান পলাশ তাদের রাজপথের লড়াই, জনকল্যাণমূলক কাজ ও সাংগঠনিক দক্ষতায় নজির স্থাপন করলে শীর্ষে পৌঁছানো তাদের এই জনপ্রিয়তা দেখেই আতঙ্কিত একটি সুবিধাবাদী মহল ও বহিরাগত কিছু ষড়যন্ত্রকারী। একজোট হয়ে মিথ্যা প্রচার, চরিত্রহনন ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে তরুণ দুই নেতৃত্বকে দমানোই যেন তাদের প্রধান লক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধারণা করা যায়, এ সকল মিথ্যা অপপ্রচার উপেক্ষা করে তরুণ দুই নেতা লড়ছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারে।


উপদেশ দিবেন, আক্রমণ করবেন না : সেনাপ্রধান

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কি যথাযথ মূল্যায়ন পাবে?


যুগের পর যুগ সংগ্রামের ইতিহাস ও ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মূল চালিকাশক্তিই যে ছাত্রদল তা মেনে নিতে সদ্য জন্ম নেওয়া কিছু রাজনৈতিক দলের নাটকীয়তা। ১৬ জুলাই (বুধবার) জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের একবছর পূর্তিতে “ছাত্রআন্দোলনের বিজয় বর্ষপূর্তি” উপলক্ষে বগুড়ার শহীদ খোকন পার্কে জেলা ছাত্রদলের উদ্দ্যোগে এক স্মরণ ও শপথ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।এ সময় জেলা ছাত্রদল সভাপতি হাবিবুর রশিদ সন্ধান সরকার বলেন, “জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। খুনি শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে ছাত্রদল রাজপথে ছিল, আছে এবং থাকবে। আমরা সকল হত্যার বিচার ছাত্রদলের পতাকাতলে রাজপথেই আদায় করবো।”

১৯৭৯ সালে জন্মের পর থেকেই ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে রাজপথের এক অগ্নিস্ফূলিঙ্গ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এরশাদীয় স্বৈরশাসন ভাঙা থেকে ১৯৯০-এর গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত ছাত্রদল লড়েছে বুক চিতিয়ে। ১/১১-এর দমননীতি পেরিয়ে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছে শতাধিক ছাত্রদল নেতা-কর্মী। ছাত্রদল মানেই যে স্বৈরাচারের যম, ইতিহাস বললেও বলছে না কিছু ষড়যন্ত্রকারী রাজনৈতিক দল।

ফ্যাসিস্ট স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার দীর্ঘ দেড় যুগ ফ্যাসিবাদী শাসনের শিকার শিকলবন্দি দেশ ও বিএনপি সমর্থনকারী দেশের সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ। গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, রাজনৈতিক মামলার পাহাড় ও নির্বিচারে নির্মম নির্যাতন-নিপীড়ন সবই যেন ছিল বিএনপি নেতাকর্মীদের নিত্যদিনের বাস্তবতা। দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে সরকার গঠন, বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে লাঠিচার্জ ও গুলি, ছাত্রদল-যুবদলের ওপর দমন সবই ছিল ইতিহাসের নৃশংস অধ্যায়। নিজ পিতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের করুণ পরিণতি, বঞ্চিত মানুষের হাহাকার ও স্বপ্নভঙ্গের আর্তনাদ দেখতে দেখতে বারবার, লক্ষবার নিভৃতে কেঁদেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান। তবুও শহীদ পিতার স্বপ্নের সেই স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দীর্ঘ সতেরোটি বছর সকল দমন-নিপীড়ন ও ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে হিমালয়ের ন্যায় অটল অবস্থান থেকে নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন ক্ষত-বিক্ষত ও আপনজন হারানো নেতা আগামী দিনের সম্ভাব্য সরকার প্রধান জনাব তারেক রহমান।

শেষ পর্যন্ত ২০২৪ সালে জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে তারেক রহমানের কৌশলী নেতৃত্ব সেই দীর্ঘশ্বাসটির ইতি টানে। দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠা হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্তে রঞ্জিত রাজপথের প্রধান হাতিয়ার হয়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। কোনো ভয়-হুমকি, নির্যাতনই দমাতে পারেনি তাদের। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সেই লড়াইয়ে ছাত্রদলের ত্যাগ দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে উজ্জ্বল এক অধ্যায় হলেও আজ প্রশ্ন উঠেছে-ছাত্রদলের এতো এতো ত্যাগ কি দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো ভুলে গেছে?

বগুড়া জেলা ছাত্রদলের সাবেক সফল সভাপতি ও বর্তমান জেলা যুবদলের সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান বলেন, ‘ছাত্রদলের ইতিহাস-সংগ্রামের ইতিহাস। ৮০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব, স্বৈরাচার পতন, ১৯৯১ ও ২০০১ সালের নির্বাচনী বিজয়, ২০০৮ সালে ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন সরকারের পরাজয় এবং ২০০৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৪০ লাখ মামলা ও ১ লাখ ১২ হাজার আসামি নিয়ে ছাত্রদলের লড়াই-সবই ছাত্রদলের এক গৌরবময় ইতিহাস ও তার বাস্তব প্রমাণ বগুড়া জেলা ছাত্রদল সভাপতি হাবিবুর রশিদ সন্ধান সরকার, তার অদম্য মনোভাব ও দলের প্রতি দায়বদ্ধতা।

কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির ঘোষিত সকল কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি বগুড়া জেলা ছাত্রদল সভাপতি হাবিবুর রশিদ সন্ধান সরকার ও সাধারণ সম্পাদক এম রাকিবুল হাসান পলাশের নেতৃত্বে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য ক্যাম্প, শিক্ষাবৃত্তি, বন্যার্তদের ত্রাণ, বৃক্ষরোপণ, পরিচ্ছন্নতা অভিযান, অসহায় পরিবারের সহায়তা, জরুরি মেডিকেল সেবা, বয়স্কদের যত্ন ও সচেতনতা কর্মশালা পরিচালনা বগুড়ায় "সন্ধান-পলাশ" পরিষদটি ছাত্রদলের অপ্রতিরোধ্য এক অবস্থান তৈরি করেছে বলেও জানা গেছে। মানবিক ও জনকল্যাণে তৎপর তরুণ দুই নেতৃত্বের সম্মিলিত অবস্থানে সন্ধান-পলাশ পরিষদের প্রতি মুগ্ধ তরুণ প্রজন্মের মনের দৃঢ় বিশ্বাসই তাদের প্রধান হাতিয়ার বলেও ধারণা করছেন অনেকে।