জনমত জরিপে এগিয়ে বিএনপি, মাঠে বাড়ছে জামায়াতের প্রভাব
নির্বাচনের পূর্বে রাজনৈতিক সমীকরণে পরিবর্তনের ইঙ্গিত

ছবি : সংগৃহীত
২০ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪৭ পিএম
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, দলে দলে পুনর্বিন্যাস এবং পরিবর্তিত জনমতের পটভূমিতে আগামী নির্বাচন হয়ে উঠতে চলেছে দেশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ। সাম্প্রতিক একাধিক জনমত জরিপে দেখা গেছে, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সবচেয়ে বেশি জনসমর্থন পাচ্ছে। একইসঙ্গে, বাড়ছে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের প্রভাব।

নাক ও চোয়ালের হাড় ভেঙে গেছে নুরের
বাংলাদেশের শহর ও গ্রামভিত্তিক তরুণদের মধ্যে পরিচালিত একটি জরিপ অনুযায়ী, বর্তমানে ভোটারদের সমর্থনের হার অনুযায়ী বিএনপি: ৪১.৭% জামায়াত: ৩১.৬% আওয়ামী লীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ): ১৩.৯% ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি): ৫.১%
২০২৫ সালের মে মাসে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার পর রাজনৈতিক মাঠে এক নতুন বাস্তবতা তৈরি হয়েছে। দেশের প্রধান প্রথাগত দলটির অনুপস্থিতিতে ভোটাররা বিকল্প খুঁজছেন, যার ফলে বিএনপি এবং জামায়াত উভয়ই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জনসমর্থন পাচ্ছে।
সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশ ঢাকায় আলোচনার জন্ম দেয়। এটি তাদের সাংগঠনিক শক্তির প্রকাশ হিসেবে ধরা হচ্ছে, এবং অনেক বিশ্লেষকের মতে, রাজনীতির অন্ধকার ঘরে আলো জ্বালানোর নতুন চেষ্টার ইঙ্গিত।
এদিকে, নতুন প্রজন্মের রাজনৈতিক দল এনসিপি ছাত্র-যুব সমাজের মধ্যে ক্রমেই জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। তবে জাতীয় পর্যায়ে দৃশ্যমান প্রভাব ফেলতে দলটির আরও সময় প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করেনি। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ও নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দল যেখানে নির্বাচন ২০২৫ সালের মধ্যেই সম্পন্ন করতে চায়, সেখানে অন্তর্বর্তী প্রশাসন জানিয়েছে নতুন সংবিধান ও রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়ায় ২০২৬ সালের এপ্রিলের আগে নির্বাচন সম্ভব নয়।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে দেশের রাজনৈতিক ভারসাম্য একধরনের শূন্যতায় পড়েছে। জামায়াতের উত্থান একদিকে যেমন ভোটারদের একাংশের জন্য উদ্বেগের কারণ, অন্যদিকে কেউ কেউ এটিকে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির প্রত্যাবর্তন বলেও দেখছেন।
এই জটিল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দেশের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন, এবং গণতান্ত্রিক চর্চাকে অব্যাহত রাখা।
বর্তমান জনমতের ভিত্তিতে বলা যায়, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই যদি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে বিএনপি সবচেয়ে এগিয়ে থাকবে। তবে জামায়াতের পুনরুত্থান রাজনীতিকে আরও জটিল এবং বিভাজনমূলক করে তুলতে পারে।
সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন ছাড়া দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরবে না এ বিষয়ে শুধু দেশের জনগণই নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে আসন্ন পরিস্থিতি।