পুলিশ কারো কথা শোনে না : মান্না

ছবি : সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক

০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৮ পিএম

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, কোনও এলাকায় পুলিশ কারো কথা শোনে না। সরকার বলে কিছু আছে? সাদা পাথর চলে যায়, বালু চলে যায়। সরকার ঠেকাতে পারে না। প্রফেসর ইউনূস তো বলেছিলেন, ‘আমাদের টপ প্রায়োরিটি হলো পুলিশ সার্ভিস।’ আমি আজ ১৩ মাস পর সরকারকে জিজ্ঞাসা করতে পারি—কী অবস্থা এখন পুলিশের, পুলিশ কোন জায়গায় দায়িত্ব পালন করছে?


দ্রুত নির্বাচনের জন্য এতো মানুষ শহীদ হয়নি : আসিফ

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত ‘বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।


তিনি বলেন, পুলিশের মধ্যে তো একটা ট্রমা আছে। ভয় পায়, কোথাও যেতে চায় না। সরকারের দায়িত্ব কী ছিল? সবার আগে পুলিশ ঠিক করা। এই যে সংস্কার নিয়ে একটা কথা বলেন, অন্য কিছু ১০ বছর থাকবে, না ১৫ বছর থাকবে। লোয়ার হাউজ না আপার হাউজ আগে ঠিক করেন। পুলিশ কবে ঠিক করবেন?

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে মান্না বলেন, আপনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেখেন কী অবস্থা। প্রত্যেক জায়গায় স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের হানাহানি, কেন? এতগুলো বছর অন্যায়ভাবে যারা ক্ষমতায় ছিল, তাদের প্রশ্ন আনছি না। কিন্তু এই সরকার আসার পর এগুলো কেন? রাতের বেলা প্রক্টর, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ফেসবুকে কাঁদছেন। সারাদেশের মানুষের কাছে বলছেন, ‘আমরা অসহায়, আমাদের বাঁচান।’ কেউ বাঁচাতে যায়নি। তাহলে একইভাবে ভোটের দিন ক্যান্ডিডেটদের পেটাতে থাকবে, ক্যান্ডিডেটদের মারতে থাকবে, বলবে আমাকে বাঁচান, কিন্তু কেউ বাঁচাতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, প্রফেসর ইউনূসকে আমি বলি, ওরকম করে আপনার দৃঢ়তা দেখার তো কোনও দরকার নেই যে ‘নির্বাচন হবেই’। আরে আপনি বললেই তো হবে না। আপনি বললেই তো পাথর আটকাতে পারেন না, বালু আটকাতে পারেন না, ধর্ষণ আটকাতে পারেন না। কারণ আপনি যে গভর্নমেন্ট চালান—সেই গভর্নমেন্ট শব্দটাকে মূলত ওভাবে জানেনও না। কারও ওপর আপনার নিয়ন্ত্রণ নেই।

তিনি বলেন, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি, আলাদা করে তিন দল, আলাদা করে সাত দলকে ডাকা রেখে একবারে সব দলকে ডাকেন। ডেকে বলেন, এটা হলো বাংলাদেশের চিত্র। আমি চাই আপনারা আমাকে সাহায্য করেন—যেন এই ভোটটা আমি করতে পারি। শুধু রাজনৈতিক দল নয়, যত স্টেকহোল্ডার আছে, আর্মি, পুলিশ সবাইকে ডেকে কথা বলেন।

গালাগালি এখন রাজনীতির সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে মন্তব্য করে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, নারীদের প্রতি যে বিদ্বেষ, ডাকসুর মতো জায়গায়, সেখানে একটা ঘটনা কেন্দ্র করে একজন ছাত্রীকে গণধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে। এখন একটা সংস্কৃতি আমদানি করছেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করতে না পেরে গালাগালি করছেন। অশ্রাব্য ভাষায়. যেগুলো মুখে উচ্চারণ করা যায় না। এরা অধিকাংশ সরকারের ছত্রছায়ায় আছেন।

তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে এখান থেকে মব জাস্টিসের শিকার কয়েকজনকে উল্টো গ্রেফতার করে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে পুলিশ আছে। মামলা করবেন, তাদের গ্রেফতার করবেন, বিচার করবেন। কিন্তু যে ঘটনা ঘটেছে, নাগরিক হিসেবে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড চালু করার কোনও জায়গা নেই।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, জনগণ ভোট দিয়ে ঠিক করবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কী হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে, বাংলাদেশের সংসদের কাঠামো কী হবে, বাংলাদেশের ক্ষমতার বিন্যাস কাঠামো কী হবে। আমরা যেসব বিষয়ে একমত হয়েছি সেটাতেও জনগণের অনুমোদন নেওয়া দরকার। যেসব বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট বা পার্থক্য আছে সেটা নিয়েও জনগণের কাছে যাওয়া দরকার।

সংখ্যানুপাতিকের দাবি বাংলাদেশের প্রগতিশীল রাজনৈতিক পক্ষ থেকেই আগে তোলা হয়েছে উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, এটি আমাদের দিক থেকেই আগে তোলা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—যখন একটা সমষ্টিগত লড়াই, অবদানের মধ্য দিয়ে একটা অভ্যুত্থান তৈরি হয়েছে, জনতা যে অভ্যুত্থানের প্রধান নায়ক, সেই অভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশে ভবিষ্যৎটা কী হবে? আমাদের রাষ্ট্রের কাঠামোটা কী হবে? কোন কোন বিষয়ের ওপর আমরা ছাড় পাবো? এটা প্রথম শর্ত হবে যে রাজনৈতিক দলগুলো কতটুকু ঐকমত্যে আসছে। যেটুকু ঐকমত্যে আসছে, সেটা তো একটা আমাদের বড় অগ্রগতি। সেটাও কিন্তু জনগণের অনুমোদন লাগবে।