‘কালচারাল ফ্যাসিস্ট’দের ছবিতে জুতা নিক্ষেপ

ছবি : সংগৃহীত

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

১৬ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৩৯ পিএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী কিছু অভিনেতার ছবি টাঙ্গিয়ে তাদেরকে ‘কালচারাল ফ্যাসিস্ট' আখ্যা দিয়ে ছবিতে জুতা নিক্ষেপ করেছে। আজ শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য এলাকায় তাদেরকে এ কর্মসূচির আয়োজন করতে দেখা যায়।


এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু

ব্যানারে চঞ্চল চৌধুরী, শাহেদ আলম, আব্দুল নূর তুষার, শমী কায়সার, শম্পা রেজা, জয়া আহসান, শামীম ওরফে মনা, জ ই নোমান, আনিস আলমগীর, সাদাত হোসাইন, গায়ক লিঙ্কন, রাহুল আনন্দ, সাকিব আল হাসান, জাহের আলভি, অরুণা বিশ্বাস, সুমন আনোয়ার, নাজিফা তুষি, সাজু খাদেম, মুমতাহিনা টয়া, সুনেরাহ বিনতে কামাল, ফারাবি হাফিজ, পিয়া জান্নাতুল, আরস খান, খাইরুল বাশার, ইরফান সাজ্জাদ, শাকিব খান, স্বাধীন খসরু, কামরুল হাসান মামুন, কচি খন্দকার এবং মেহের আফরোজ শাওনের ছবি দেখা গেছে।


বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, গতকাল ১৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানানোর কারণে কতিপয় শিল্পী, অভিনেতা, গায়ক, সংবাদকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ব্যক্তিদের ‘কালচারাল ফ্যাসিস্ট’ আখ্যা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগে থেকেই বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন তারা। এর ধারাবাহিকতায় আজ তারা ছবি টানিয়ে জুতা নিক্ষেপ করছেন।

কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা অভিযোগ করে বলেন, এসব সেলিব্রিটি জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তকে তাচ্ছিল্য করে গণহত্যার পক্ষে বৈধতা দিচ্ছে। তারা এদেশের মাটিতে আওয়ামী লীগকে আবারও প্রাসঙ্গিক করে তোলার পাঁয়তারা করছে। তারা এদেশের মাটিতে কালচারাল হেজিমনির জন্ম দিয়েছিল। এ কারণে তাদের বয়কট করা ছাড়া আর কোনো পথ নেই বলে তারা জানান।

আয়োজকদের একজন আরবি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবদুল ওয়াহেদ বলেন, গতকালকে আমরা দেখেছি তথাকথিত সেলেব্রেটিরা আওয়ামী লীগকে নরমালাইজ করার জন্য মুজিব বন্দনায় নেমেছিল, অথচ ২০২৪ এর ১৫ই আগস্ট কোনো টু শুব্দও করেনি যেহেতু ৫ আগস্ট বাকশালী মুজিবের কন্যা খুনি হাসিনা পালিয়েছিল। ওই দিনই আওয়ামী লীগের নিশানা শেষ হয়ে যায়। এখন আওয়ামী লীগকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্য নতুন করে মুজিবকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে নিষিদ্ধ আওয়ামীলীগ অথচ এই মুজিবকে দিয়েই তারা ফ্যাসিবাদ পুনরায় প্রতিষ্ঠা করেছিল।ভালো মুজিব বলতে কিছু নাই, তাকে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী হত্যা না করলে আজকের এই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ পাওয়া যেতো না।

তিনি বলেন, কালচারাল ফ্যাসিস্টরা সংঘবদ্ধ হয়ে লীগের টাকা খেয়ে গতকাল প্রচারণায় নেমেছে। সরকার গত ১ বছরে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা গতকাল শোক প্রকাশ করার সাহস করেছে।আর তাছাড়া জুলাই ঘোষণাপত্রে ১৫ই আগস্ট বিপ্লবকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি,অথচ ৭ই নভেম্বরকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

১৫ আগস্ট না হলে ৭ নভেম্বর কীভাবে আসতো?

তিনি আরও বলেন, এই বিপ্লবকে স্বীকৃতি না দিলে এভাবে মুজিববাদকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। তাই আমরা ছাত্র-জনতাকে নিয়ে আজকে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি করেছি কালচারাল ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে। আমি সাংবিধানিকভাবে ফ্যাসিবাদবিরোধী আইন করার দাবি জানাই, যাতে কোনো ফ্যাসিস্টদের জন্য আর মায়া কান্না করতে না পারে।

আয়োজকদের মধ্যে আরো ছিলেন- জিহাদী ইহসান, শাহরিয়ার ফাহাদ, রোবায়েত রাফি, ডিকে সুলাইমান, ডাক্তার শাফিন ইব্রাহিম, রেজাউল হাসানসহ অনেকে।

এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে শুক্রবার অভিনেতা খাইরুল বাশার তার ভেরিফাইড ফেসবুকে লিখেন, “আজ নাকি আমার ক্যাম্পাসে আমাদের ছবিতে জুতা নিক্ষেপ হবে? আমি কোন অপরাধে? শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছি বলে? তবে ছবিটা বড় করে প্রিন্ট করো এবং সবচেয়ে পচা জুতাটা নিক্ষেপ করো। আমি হাসিমুখে গ্রহণ করব।”