কপিরাইট ফ্রি মিউজিকের ঠিকানা

প্রতীকী ছবি
০২ আগস্ট ২০২৫, ০৬:২৪ পিএম
ডিজিটাল কনটেন্টের এই যুগে ভিডিও বানানো যতটা সহজ। তার চেয়ে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে উপযুক্ত ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক খোঁজা। কারণ, ইন্টারনেট থেকে যেকোনো গান ডাউনলোড করে ব্যবহার করলেই তা কপিরাইট লঙ্ঘনের আওতায় পড়ে। ইউটিউব, ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে এমন সংগীত ব্যবহার করলে ভিডিও demonetize হতে পারে। এমনকি কনটেন্ট মুছে ফেলার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এ কারণে কনটেন্ট নির্মাতাদের কাছে ‘কপিরাইট ফ্রি মিউজিক এখন এক অমূল্য সম্পদ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই সংগীত পাওয়া যাবে কোথায়?

টিকটকের বিষয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত
সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও সহজ উৎস হলো YouTube Audio Library । এটি গুগলের নিজস্ব একটি অডিও ভান্ডার। যেখানে রয়েছে হাজার হাজার কপিরাইট ফ্রি মিউজিক ও সাউন্ড ইফেক্ট। আপনি চাইলে মুড, ইন্সট্রুমেন্ট কিংবা ভিডিওর দৈর্ঘ্য অনুযায়ী ফিল্টার করে গান বাছাই করতে পারবেন। অনেক ট্র্যাক একেবারে ফ্রি। অ্যাট্রিবিউশন ছাড়াও ব্যবহারযোগ্য। নতুন ইউটিউবারদের জন্য এটি এক অনবদ্য সম্পদ।
এর পাশাপাশি আছে জনপ্রিয় ও বহু পুরোনো একটি উৎস—Free Music Archive (FMA)। এই প্ল্যাটফর্মটি Creative Commons লাইসেন্সে গান প্রদান করে। অর্থাৎ ব্যবহারকারীরা নির্দিষ্ট শর্তে বিনামূল্যে গান ব্যবহার করতে পারেন। শিক্ষা, গবেষণা, তথ্যচিত্র, রেডিও কিংবা ব্যক্তিগত প্রজেক্টে। সবকিছুর জন্যই এখানে আলাদা আলাদা বিভাগ রয়েছে। তবে ব্যবহার করার আগে প্রতিটি গানের লাইসেন্স শর্ত ভালো করে দেখে নিতে হবে।
ইন্টারনেটের অন্যতম জনপ্রিয় নাম Kevin MacLeod-এর সাইট incompetech.com-এ রয়েছে শত শত কপিরাইট ফ্রি মিউজিক। শুধু অ্যাট্রিবিউশন দিলেই আপনি এসব গান বাণিজ্যিকসহ যেকোনো কাজেই ব্যবহার করতে পারবেন। তার তৈরি কিছু ট্র্যাক এমনকি হলিউডের ইনডিপেনডেন্ট চলচ্চিত্রেও ব্যবহৃত হয়েছে।
আরো কিছু দুর্দান্ত ওয়েবসাইট হচ্ছে—Bensound, Pixabay Music, Mixkit এবং Audio Library Plus। এসব প্ল্যাটফর্মেও রয়েছে শত শত রকমারি ট্র্যাক। লোকসংগীত থেকে শুরু করে Lo-fi, অ্যাম্বিয়েন্ট থেকে রক সবই মিলবে। Bensound কিংবা Pixabay-এর বিশেষ সুবিধা হলো, এসব গান কমার্শিয়াল ভিডিওতেও ব্যবহারযোগ্য। শুধু নির্দিষ্ট লাইসেন্স শর্ত মানলেই হয়।
অনেকেই ভুল করে ভাবেন ‘কপিরাইট ফ্রি’ মানেই যেকোনোভাবে যেকোনো প্ল্যাটফর্মে ব্যবহারযোগ্য। কিন্তু বাস্তবে এমন নয়। বেশির ভাগ কনটেন্টই Creative Commons Attribution লাইসেন্সের আওতায় অর্থাৎ গান ব্যবহারের সময় মূল স্রষ্টার নাম ও সোর্স উল্লেখ করতে হয়। কেউ কেউ আবার ‘Non-Commercial Use Only’ বা ‘No Derivatives’ শর্ত জুড়ে দেন। তাই গান ব্যবহারের আগে অবশ্যই তার লাইসেন্স টাইপ পড়ে বুঝে নিতে হবে।
যারা মোবাইল থেকেই ভিডিও বানান, তাদের জন্যও রয়েছে সুখবর। Music Maker JAM, SoundCloud (CC filtered) কিংবা YouCut Video Editor-এর মতো অ্যাপগুলোতেও কপিরাইট ফ্রি মিউজিক যুক্ত আছে। চাইলে সেখান থেকেও সহজেই গান ব্যবহার করা যায়।
সৃজনশীলতার নতুন দিগন্তে পা রাখতে গিয়ে যেন কপিরাইটের বেড়াজালে আটকে না পড়তে হয়। তাই কপিরাইট ফ্রি মিউজিকের উৎসগুলো জানা থাকা এখন প্রতিটি ডিজিটাল নির্মাতার জন্য অপরিহার্য। একবার যদি আপনি এই ভান্ডারগুলো চিনে ফেলেন, তাহলে আপনার ভিডিও, পডকাস্ট বা প্রেজেন্টেশন এক অন্যরকম পেশাদারিত্ব অর্জন করবে।