নেপালে কারাগারে সংঘর্ষে নিহত ৩, পালিয়েছেন ১৫ হাজার কয়েদি

ছবি : সংগৃহীত
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:০০ পিএম
নেপালের বিভিন্ন কারাগারে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ায় সংঘর্ষে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় ১৫ হাজারেরও বেশি কয়েদি পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন কয়েদিরা গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কারাগার ভাঙার চেষ্টা চালায়। এর পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তাবাহিনী অভিযান শুরু করে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) জেনারেশন-জেড তরুণদের নেতৃত্বে দেশজুড়ে শুরু হওয়া সরকারবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে এ সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের চাপেই প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি মঙ্গলবার পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এর পরপরই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন করা হয়।
ভিন্ন জীবনধারা গড়ে তুলতে হবে : ড. ইউনূস
পুলিশ সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে মাধেশ প্রদেশের রামেচাপ জেলা কারাগারে বন্দিদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে তিনজন নিহত ও ১৩ জন আহত হন। কয়েদিরা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালায়। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে পশ্চিম নেপালের ব্যাংকে জেলার নওবাস্তা কিশোর সংশোধনাগারে সংঘর্ষে পাঁচ কিশোর বন্দি নিহত ও চারজন গুরুতর আহত হয়। বন্দিরা ওই সময়ে নিরাপত্তাকর্মীদের অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানায়।
মঙ্গলবার থেকে দেশব্যাপী দুই ডজনেরও বেশি কারাগারে দাঙ্গা, অগ্নিসংযোগ ও পালানোর ঘটনা ঘটেছে। যুব আন্দোলনকারীরা একাধিক কারাগারে হামলা চালিয়ে প্রশাসনিক ভবনগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয় ও গেট ভেঙে ফেলে। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৫টিরও বেশি কারাগার থেকে অন্তত ১৫ হাজার বন্দীর পালানোর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
এর মধ্যে কাঠমান্ডু উপত্যকার কেন্দ্রীয় কারাগার (সুন্ধারা) থেকে ৩৩০০, ললিতপুরের নাখখু কারাগার থেকে ১৪০০ এবং দিল্লীবাজার কারাগার থেকে ১১০০ বন্দি পালিয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংকে জেলা কারাগার থেকে ৪৩৬, ব্যাংকে কিশোর সংশোধনাগার থেকে ১২২, মহোত্তরির জালেশ্বর কারাগার থেকে ৫৭৫, সুনসারির ঝুমকা কারাগার থেকে ১৫৭৫, চিতলং থেকে ৭০০, কপিলবস্তু থেকে ৪৫৯, কৈলালী থেকে ৬১২, কান্চনপুর থেকে ৪৭৮ এবং সিন্ধুলি থেকে ৫০০ বন্দির পালানোর খবর মিলেছে।
গান্ডাকি প্রদেশের কাস্কি জেলা কারাগার থেকে পালানো ৭৭৩ জনের মধ্যে ১৩ জন ভারতীয় ও চারজন অন্যান্য দেশের নাগরিক বলে জানিয়েছেন জেল সুপার রাজেন্দ্র শর্মা।
এদিকে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (SSB) বৃহস্পতিবার বৈরগনিয়া সীমান্তে ১৩ বন্দিকে আটক করেছে। তারা রৌতাহাট জেলার গৌর কারাগার ভেঙে পালিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। মোট ২৯১ বন্দির মধ্যে গৌর কারাগার থেকে প্রায় ২৬০ জন পালিয়েছেন। এর মধ্যে ৩১ জনকে নেপাল পুলিশ ফিরিয়ে এনেছে, ১৩ জনকে ভারতীয় বাহিনী আটক করেছে এবং ২১৬ জন এখনো পলাতক।
কারা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক লীলা প্রসাদ শর্মা জানান, সেনাবাহিনী, সশস্ত্র পুলিশ ও নেপাল পুলিশকে মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব পালানো বন্দীদের পুনরায় আটক করতে আমরা সব ধরনের সম্পদ কাজে লাগাচ্ছি।” সূত্র: ডেকেন হেরাল্ড


