দৈনিক কালবেলার হলুদ সাংবাদিকতার নিন্দা

আমি হতদরিদ্র ছিলাম অথবা আমার বাবা ভ্যানচালক ছিলেন বলে আমি কি কোনো অপরাধ করেছি? দরিদ্র থাকলে কেউ কি আর সচ্ছল হতে পারবে না?

নিউজ ডেস্ক

০৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৩২ পিএম

দৈনিক কালবেলা পত্রিকায় গত ৩০ ডিসেম্বর ‘মদের ব্যবসায় মাতব্বরিতেও রাজনৈতিক কানেকশন’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে পত্রিকাটির লাগামহীন অপপ্রচার এবং হলুদ সাংবাদিকতার নিন্দা জানাই।


বাংলাদেশ-ভারত সেনাপ্রধানের ভার্চুয়াল বৈঠক


প্রথমত, আলোচ্য সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং চরম মানহানিকর। এটি অপসাংবাদিকতার একটি প্রকৃষ্ট উদাহারণ। কারণ, সংবাদের শুরুতেই আমার পৈতৃক পরিচয় তুলে ধরে বলা হয়েছে- আমার বাবা একজন ভ্যানচালক ছিলেন। আমি হতদরিদ্র ঘরের সন্তান ছিলাম। ভাগ্য বদলের আশায় আমি ঢাকায় এসেছিলাম ইত্যাদি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আমি হতদরিদ্র ছিলাম অথবা আমার বাবা ভ্যানচালক ছিলেন বলে আমি কি কোনো অপরাধ করেছি? দরিদ্র থাকলে কেউ কি আর সচ্ছল হতে পারবে না? এক্ষেত্রে কি কালবেলা পত্রিকার কাছ থেকে কোনো পূর্বানুমতি নিতে হবে?



দ্বিতীয়ত, তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নিই যে আমি একজন বড় মাপের অপরাধী। তাহলেও কি আমার পিতা এজন্য দোষী হতে পারেন? কোনো পত্রিকা তাকে ‘ভ্যানচালক’ বলে তাচ্ছিল্য করতে পারে? আপনাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম।

আমি নির্দ্বিধায় বলতে চাই- হ্যাঁ, আমি দরিদ্র ছিলাম। দরিদ্র পরিবারে আমার জন্ম। কিন্তু আমি আমার অতীত পরিচয় নিয়ে মোটেও কুণ্ঠিত নই। দরিদ্র পিতার পরিচয় দিয়ে আমি বরং সম্মানিত হই। কারণ আমি কোনো অপরাধ করে আজকের অবস্থানে আসিনি। দিনরাত অক্লান্ত শ্রম আর মেধার বিনিময়ে আমি আজকের অবস্থানে আসতে সক্ষম হয়েছি। কারো দয়া বা আনুকূল্যে নয়। এছাড়া আমি অবৈধ পথেও কোনো সম্পদ উপার্জন করিনি। বাংলাদেশের কোথাও আমার বিরুদ্ধে অপরাধ, দুর্নীতি, ঋণখেলাপি বা অর্থপাচারের অভিযোগ নেই। আমি সম্পূর্ণ বৈধপথে দেশের সকল আইনকানুন মেনে সরকারের কাছ থেকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত হয়ে রেস্টুরেন্ট ও বার সেক্টরে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে আসছি।

আপনাদের বলতে চাই, আমি দীর্ঘ তিন দশক ধরে ব্যবসা করে আসছি। একেবারে তৃণমূল থেকে শুরু করে আজ হোটেল, পর্যটন এবং বেভারেজ সেক্টরে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু তিল তিল করে গড়ে তোলা এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর কেউ কেউ কালিমা লেপনের অপচেষ্টা করেছে। কোনো ধরণের যাচাই-বাছাই ছাড়া মনগড়া এবং মিথ্যার বেসাতির মাধ্যমে তারা আমার সুনাম নষ্টের অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। যা একেবারেই অনভিপ্রেত। এটি কোনো দায়িত্বশীল গণমাধ্যমের কাজ হতে পারে না।

কালবেলা পত্রিকাটিতে আরও বলা হয়েছে, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা ছিল। অবশ্য এই একটি জায়গায় কালবেলা কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্য পরিষ্কার হয়েছে। কারণ, বোধ করি তারা এখন নিজেরাই গভীরভাবে পরিচয় সংকটে ভুগছে। কালবেলার একাধিক সাংবাদিক এবং সর্বোপরি সম্পাদক সন্তোষ শর্মা নিজেই স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে পরিচিত। তিনি নিজেকে প্রকাশ্যে বিদেশি রাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট বলে পরিচয় দিয়ে আসছেন। ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার এই হলুদ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অনুসন্ধান শুরু করেছে। এতে তিনি হয়তো কিছুটা ভীতসন্ত্রস্ত। যে কারণে সন্তোষ শর্মা রাতারাতি ভোল পাল্টাতে মরিয়া।
আপনাদের অজানা নয় যে, আমাকে এর আগেও সাবেক সরকারের আমলে ব্যাপকভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। সাবেক আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ ওরফে ডিবি হারুনের রোষানলে পড়ে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিপুল অংকের ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি আমি আরেক দফা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নির্যাতনের শিকার হয়েছি। কয়েকমাস আগে বিনা নোটিশে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে আমার প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে কোটি টাকা মূল্যে আমদানিকৃত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পানীয় জব্দ করা হয়েছে। এমনকি ঘটনার বিষয়ে আমাদের কোনো ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি!
আমরা এসব অনাচার এবং অবিচার থেকে পরিত্রাণ চাই। একই সঙ্গে কালবেলাসহ যেকোনো গণমাধ্যমের কাছ থেকে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা প্রত্যাশা করি। যাতে দেশ-জাতি উপকৃত হতে পারে। কারো চরিত্র হনন বা হলুদ সাংবাদিকতার মাধ্যমে কাউকে ছোটভাবে উপস্থাপনের এই ধ্বংসাত্মক প্রবণতা দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষ অচিরেই বন্ধ করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।

নিবেদক,
আলহাজ্ব মুক্তার হোসেন গাজী
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক

সাংবাদিকতা
অপপ্রচার
কালবেলা
মাদক
গণমাধ্যম