আ. লীগ নেতার সেই চিড়িয়াখানা সিলগালা

ছবি : সংগৃহীত

সারাদেশ ডেস্ক

০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১০ পিএম

ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিটি কর্পোরেশনের ৪নং ওয়ার্ড কমিশনার মাহবুবুর রহমান দুলালের মালিকানাধীন অবৈধ চিড়িয়াখানা সিলগালা করেছে বনবিভাগ। এ সময় বিভিন্ন প্রজাতির ২৩টি বন্যপ্রাণী জব্দ করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে নগরীর জয়নুল আবেদীন উদ্যানের অবৈধ মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান চালিয়ে অসুস্থ ভালুকসহ সব বণ্যপ্রাণী জব্দ করা হয়।


চালু হয়নি পদ্মা রেল সেতু সংযোগ

সম্প্রতি চিড়িয়াখানার ভেতরে থাকা একটি ভালুকের শরীরে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়ালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ঘটনাটি জানতে পেরে অভিযান পরিচালনা করে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।  


জব্দ করা প্রাণীর মধ্যে রয়েছে- একটি অজগর সাপ, দুটি ময়ুর, পাঁচটি হরিণ, দুটি মদনটাক পাখি, একটি কুমির, দুটি ভাল্লুক, একটি সজারু, পাঁচটি বানরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।

এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা। তিনি জানান, বন্যপ্রাণী সংগ্রহ, দখলে রাখা, প্রদর্শন ও সংরক্ষণ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু এখানে অবৈধভাবে চিড়িয়াখানা পরিচালানা করে বন্যপ্রাণী বন্দি রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় ২৩টি বন্যপ্রাণী জব্দ করা হয়। জব্দকৃত এই প্রাণীগুলোকে গাজীপুর সাফারি পার্কে অবমুক্ত করা হবে। তবে এর মধ্যে কিছু প্রাণীকে ১৫ দিন কোয়ারেন্টিনে রেখে স্বাভাবিক বণ্য পরিবেশে অবমুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।

বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস বলেন, আইন অমান্য করে ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে এই চিড়িয়াখানাটি গড়ে তোলা হয়েছিল। খবর পেয়ে প্রাণীগুলোকে উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে একটি ভালুক খুব অসুস্থ, তার শরীরে পচন ধরেছে। আহত এই ভালুকটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।  

জানা গেছে, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে এই চিড়িয়াখানাটি তৎকালীন মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকরামুল হক টিটুর অনুসারী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিটি কর্পোরেশনের ৪নং ওয়ার্ড কমিশনার মাহবুবুর রহমান দুলাল পরিচালনা করে আসছিল। 

তবে একটি সূত্রের দাবি, এই চিড়িয়াখানাটি ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন থেকে নামমাত্র মূল্যে ইজারা নিয়েছিলেন ফুলবাড়িয়ার সংসদ সদস্যের পুত্র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমদাদুল হক সেলিম। পরে তার কাছ থেকে ৪নং ওয়ার্ড কমিশনার মাহবুবুর রহমান দুলালের মালিকানা নিয়ে পরিচালনা করে আসছিলেন। তখন থেকে এই চিড়িয়াখানাতে বিভিন্ন প্রাণীকে খাচায় বন্দি করে টিকিট বিক্রির মাধ্যমে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি রেস্টুরেন্ট এবং বিভিন্ন রাইড স্থাপনের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবসার প্রসার ঘটানো হয়।

তবে বিগত ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে তারা গা ঢাকা দিলে চিড়িয়াখানাটির দায়িত্ব নেন নগরীর ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মামুন। তবে শুরু থেকেই চিড়িয়াখানটির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা এবং কর্মীদের দুর্ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলে কিছু বলতে পারতো না। তবে সম্প্রতি চিড়িয়াখানার ভেতরে থাকা একটি ভালুকের শরীরে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়ালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ঘটনাটি জানতে পেরে অভিযান পরিচালনা করে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।