৬০ লাখ মামলা কেন প্রত্যাহার হচ্ছে না, প্রশ্ন রিজভীর

ছবি : সংগৃহীত
২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫৯ পিএম
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সব মামলা প্রত্যাহার হলেও বিএনপির ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর নামে করা মামলা কেন প্রত্যাহার হচ্ছে না, এই প্রশ্ন রেখেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার সম্ভাবনা বেড়ে গেছে : ফখরুল
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সময় বিএনপির ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে হওয়া মামলা আট মাস চলে যাওয়ার পরও আদালতের সেলফে থাকার কথা ছিল না। আমরা শুনেছি প্রধান উপদেষ্টার সব মামলা প্রত্যাহার হয়েছে। উনিও শেখ হাসিনার ঈর্ষা, বিদ্বেষ এবং আক্রোশের শিকার হয়েছেন। আমরাও আন্দোলন সংগ্রামে থেকে নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছি। দুএকজন উপদেষ্টাও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তাদের মামলা যদি প্রত্যাহার হয়ে থাকে তাহলে এই ৬০ লাখ মানুষেরটা কেন হচ্ছে কেন? অতি দ্রুত এ মামলাগুলোর নিষ্পত্তি করতে হবে।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ফ্যাসিবাদের মিথ্যা মামলায় ৬০ লাখ আসামি, মুক্তি কতদূর’ শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফ্যাসিবাদের বিচারকদেরও বিচার হওয়া উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা নুরেমবাগ ট্রায়ালে দেখেছি- হিটলারের আদালতের যারা বিচারক ছিলেন, কোনো ধরনের যুক্তির কথা না শুনে হিটলারের কথায় লাখ লাখ কয়েদিকে পুড়িয়ে মারার যারা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, তাদের বিচার করেছেন। তাদের যদি বিচার হতে পারে, তাহলে আজকে শেখ হাসিনার আমলের ফ্যাসিবাদকে যারা প্রলম্বিত করেছেন, তাদের কেন বিচার হবে না। তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘যারা এই ফ্যাসিজমকে প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করেছেন, তাদের অন্যতম হচ্ছেন আদালত। বিচারপতি খায়রুল হক, বিচারপতি এনায়েতুর রহিম, বিচারপতি আসাদুজ্জামান- (আছে) এ রকম অসংখ্য নাম। তাদের বিচার নিশ্চিত করলে ভবিষ্যতে কেউ কোনো আদালতকে দিয়ে তার অশুভ ইচ্ছা ও অগণতান্ত্রিক নির্যাতন–নিপীড়ন মানুষের ওপর চালানোর সাহস পাবে না।’
তিনি বলেন, ‘এরা সবচেয়ে নির্দোষ যে নারী, জনগণের পক্ষে সংগ্রাম করেছেন নিরবিচ্ছিন্নভাবে, শত নিপীড়ন-নির্যাতন ভোগ করে জনগণকে ছেড়ে যাননি, মাটিকে ছেড়ে যাননি, সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় আসাদুজ্জামান তাকে সাজা দিয়েছেন। সেই বিচারকেরা কেন শাস্তির আওতায় আসবেন না।’
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন বলেন, ‘পৃথিবীতে এমন অনেক দেশ আছে, যে দেশের জনসংখ্যা ৬০ লাখ নেই। অথচ বিএনপির ৬০ লাখ নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।’
মাহাদী আমিনের এ বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, ‘একটি দেশের জনসখ্যার চেয়ে বাংলাদেশে আসামির সংখ্যা বেশি। ডেনমার্কে ৫০ লাখ লোক বসবাস করেন। অথচ আমাদের দেশে বিএনপির ৬০ লাখের বেশি নেতা–কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।’
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক সৈয়দ আবদাল আহমেদ সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ।
সংগঠনটির সদস্যসচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজীজুল বারী হেলাল, নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফারজানা শারমিন প্রমুখ।