আশিকাটি ইউনিয়নে ফের বেড়েছে মাদকের ভয়াবহতা

ছবি : সংগৃহীত

চাঁদপুর প্রতিনিধি

১৯ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৪৮ পিএম

কয়েকবছর তুলনামূলক শান্ত থাকার পর আবারও চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের উত্তরাঞ্চলে মাদকের ভয়াবহতা বেড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ—একটি সংঘবদ্ধ মাদক কারবারি চক্র প্রায় প্রতিটি বাড়িতে মাদক প্রবেশ করিয়ে যুব সমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে জড়িয়ে ফেলছে। বিষয়টি জানার পর পুলিশ তালিকা তৈরি ও অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে।


নারীবিদ্বেষী প্রচারণা বন্ধে ৭ দাবি

গত কয়েকদিন স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিশেষ করে ৪ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মাদক সেবন ও বিক্রির মাত্রা আশঙ্কাজনক। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে চলে মাদক কেনাবেচা।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বাসিন্দা জানান, দক্ষিণ রালদিয়া থেকে পশ্চিম হোসনপুর গ্রামের বডুর বাজার সংলগ্ন মোল্লা কান্দি, এবং দক্ষিণ রালদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পারিবারিক স্বাস্থ্য ক্লিনিক পর্যন্ত এলাকায় সবচেয়ে বেশি মাদক কারবারিদের আনাগোনা দেখা যায়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে এসব কারবার পরিচালনা করছে। তাদের মধ্যে অন্যতম পশ্চিম হোসেনপুর গ্রামের হাসিম গাজীর ছেলে রুবেল গাজী ওরফে গাজী কালু, যাকে এলাকার অন্যতম খুচরা মাদক বিক্রেতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এ চক্রে আরও রয়েছে দক্ষিণ রালদিয়া গ্রামের আনোয়ার খানের ছেলে কামরুল খান, যার অনুপস্থিতিতে তার স্ত্রী কারবারটি চালায়। পশ্চিম হোসেনপুর গ্রামের আলফু গাজীর ছেলে মাসুদ গাজী, যিনি প্রকাশ্যে মাদক সেবন ও বিক্রি করেন।

এ ছাড়া দক্ষিণ রালদিয়া গ্রামের মৃত এনায়েত খানের ছেলে আবুল খায়ের খানকে ওই এলাকায় মাদক সরবরাহকারী হিসেবে নির্ভরযোগ্য সূত্র শনাক্ত করেছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় চার বছর আগে এই ইউনিয়নে তৎকালীন রাজনৈতিক দলের কিছু ব্যক্তিও মাদক কারবারে জড়িত ছিল। তখন সদর মডেল থানা পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের সতর্ক করলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। কিন্তু গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে আবার ভয়াবহতা বাড়তে থাকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক বলেন, মাদকের ছোবলে যুবসমাজ বিপথগামী হচ্ছে। সন্তানদের নিয়ে তারা চরম দুশ্চিন্তায় আছেন। প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা না নিলে এলাকায় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বাড়বে বলে তাদের আশঙ্কা।

তারা আরও জানান, বিষয়টি তারা ইতোমধ্যে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ আব্দুর রকিব, সদর সার্কেল এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন।

চাঁদপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, “স্থানীয়রা আমাদের মাদকের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছেন। পুলিশ কাজ করছে। মাদকে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। অভিযান চালিয়ে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।