নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া মানেই দেশের সর্বনাশ : ফখরুল

১০ নভেম্বর ২০২৫, ০২:১২ পিএম
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে নির্বাচনকে বানচাল করে দেওয়ার এবং পিছিয়ে দেওয়ার যে চক্রান্ত চলছে, তা সফল হলে দেশের সর্বনাশ হবে। এই সংকটময় মুহূর্তে একটি নির্বাচিত সরকার খুব জরুরি। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আর কালক্ষেপণ না করে দ্রুত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার (১০ নভেম্বর) বেলা ১১টায় ঠাকুরগাঁও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে জেলা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
ঘোষণা দিয়েও জিরো পয়েন্টে আসেনি আওয়ামী লীগ
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ঠাকুরগাঁও জেলা ইউনিট কমান্ডের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর করিম সভায় সভাপতিত্ব করেন।
বিএনপি মহাসচিব জানান, তার দল অন্তর্বর্তী সরকারকে সম্মান করে ও শ্রদ্ধা করে এবং আশা করে যে, তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) অতি দ্রুত আর কোনো কাল বিলম্ব না করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ব্যবস্থা করবেন। দেশে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করবেন।
তিনি বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখতে হবে দেশটা আমাদের, এই মাটি আমাদের। এই মানুষগুলো আমাদের।’
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকে পরিকল্পিতভাবে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। যারা একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর ছিল, সেই চক্রই এখন ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার করে দেশটাকে ’গ্রাস করার চেষ্টা’ করছে। এসময় তিনি সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানান।
মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজকে একটা চেষ্টা করা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধকে ঘুরিয়ে দেওয়ার। বলা হচ্ছে—’৭১-এ হয় নাই, আমরা কিছুই করি নাই। দেশটার জন্য আমরা কোনো অবদানই রাখিনি। এখন যারা ’২৪-এ করেছে তারাই সব করেছে—এইরকম একটা ধারণা দিচ্ছে।’
তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘দীর্ঘ ৯ মাস যারা যুদ্ধ করেছি, পরিবার পরিজনের কোনো খবর নিতে পারিনি... সেই দিনটাকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে সেটাকে কি ভুলিয়ে দেওয়া যায়?’ মুক্তিযোদ্ধারা ’না’ বললে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘আমার জন্মটাকে কি আমি ভুলতে পারি?’
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, একটি মহল দেশের স্বাধীনতা ও মূল্যবোধের বিরুদ্ধে কাজ করছে। তিনি বলেন, ’আজকে সুপরিকল্পিতভাবে একটি চক্র, একটি মহল, যারা ১৯৭১ সালে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সঙ্গে যোগসাজশ করে এদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছিল, তাদের পরিবারকে হত্যা করেছিল, তাদের মেয়েদেরকে তুলে দিয়েছিল পাক বাহিনীর হাতে। তাদের সঙ্গে কি এদেশের মানুষ আপোষ করতে পারে?’
তাঁর এই বক্তব্যের সমর্থনে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা ’না’ সূচক মন্তব্য করেন। এ সময় একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা স্লোগান দেন, ’একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার। রাজাকার আল বদর হুঁশিয়ার সাবধান।’
মির্জা ফখরুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি এসব কথা বলতে চাই না, কিন্তু যারা দেশটাকে গিলে খাওয়ার চেষ্টা করছে, গ্রাস করার চেষ্টা করতেছে’, তাদের রুখতে আজ বিভেদের চেতনাকে সামনে আনতে হবে।
তিনি জানান, তাদের দল ক্ষমতায় থাকাকালে বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় তৈরি করেছিলেন এবং মুক্তিযোদ্ধার ভাতা শুরু করেছিলেন। তিনি হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।


